২য় খন্ডটি বিভক্ত আছে পাঁচটি মূল বিভাগে । এর মধ্যে প্রথম অংশটিতে রয়েছে আই পি এল ছাড়া (যেটি প্রথম খন্ডে বিস্তারিত আলোচনা করা আছে), অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজী লীগ ঘিরে আলোচনা ও কয়েকটি কেস স্টাডি । এমন কেস স্টাডিতে পাঠক দেখতে পাবেন, কিভাবে একটি ম্যাচ ঘোরার আগে জুয়ার বোর্ডে ঠিক কি কি পরিবর্তন হয়,রেট কিভাবে ঘুরে যায় এবং তারপরে, ম্যাচের রং পরিবর্তিত হতে থাকে। জুয়ার বোর্ড থেকে তুলে আনা সেইসব গ্রাফিকস এবং সংখ্যাতত্ত্বের অকাট্য বিশ্লেষণে, এইসব কেস স্টাডিতে জড়িয়ে যাবেন অনেক জাতীয় ও প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলোয়াড় এবং অবশ্যই কিছু আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়। যেমন , ক্যারেবিয়ান প্রিমিয়ার লীগের যে কেস স্টাডি রয়েছে, সেইসবে জড়িয়ে আছেন নিকোলাস পূরণ , ব্র্যাভো, ইভিন লুইস, রাদারফোরড, হেটমায়ার, ইমরান তাহির, ফ্যাবিয়ান এলেনের মত প্রখ্যাত আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়েরা , যাদের আমরা আই পি এল, বি পি এল সমেত নানা আন্তর্জাতিক টি-২০ প্রতিযোগিতায় দেখি। এছাড়া, এই অধ্যায়ে রয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজী ক্রিকেট লীগের একটি সংক্ষিপ্ত ইতিহাস।
দ্বিতীয় অধ্যায়টি সম্পূর্ণ ‘তৃতীয় রিপু’ সংক্রান্ত, নাম ‘তৃতীয় রিপুর ফাঁদে ‘ – এই বইয়ের ভরকেন্দ্র বলা যায় এই অংশটিকে। আগের খন্ডে আমরা মুলত আলোচনা করেছিলাম, ভারতীয় উপমহাদেশের চারটি ক্রিকেট খেলুড়ে দেশের খেলোয়াড়দের কীর্তি কাহিনী। এই খন্ডে থাকবে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া , নিউজিল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিভিন্ন প্রাক্তন ও বর্তমান খেলোয়াড়দের কান্ডকারখানা। তবে, এই অধ্যায়ের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশটি সম্ভবত সাংবাদিকদের কয়েকটি স্টিং অপারেশন। না, এই স্টিং-গুলোতে জড়িত খেলোয়াড়দের নাম আপনি জানেন না , কারণ , এই স্টিং এবং তার ফলাফল যখনই আই সি সি-কে জানানো হয়েছে (এমনকি , কোন কোন ক্ষেত্রে আই সি সি’র দুর্নীতিদমন শাখার অফিসারদের, স্পট / সেশন ফিক্সের আগাম খবর দিয়ে টিভি’র সামনে বসিয়ে দেখানো হয়েছে, এবং প্রতিক্ষেত্রেই সেই আগাম খবর মিলে গেছে) তখনও আই সি সি জানিয়েছে, ব্যাপারটা কাকতালীয় হতে পারে। অথচ, গাণিতিক নিয়মে, ম্যাচের ভিতর এমন কাকতালীয় ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা ৩ কোটি ৩০ লক্ষ বারের মধ্যে মাত্র একবার। কাজেই, নিরপেক্ষ পাঠকের মনে, ঐ সব ম্যাচে ফিক্সিং নিয়ে কোন সন্দেহ থাকেনা। কিন্তু, যেহেতু, আই সি সি শুরু থেকে এই নিয়ে ‘ Denial mode’ এ ছিল, তাই ঐ স্টিং’র সাংবাদিকেরা সংশ্লিষ্ট জড়িত ক্রিকেটারের নাম নেননি বা ম্যাচের ঠিক কোন জায়গায় স্পট/ সেশন ফিক্স হয়েছে তাও বলেননি । শুধু, তাঁরা একটা সূত্র রেখে গেছেন বিশেষ ঘটনাটির বিষয়ে। এবার, আমি এই স্টিংগুলি ধরে ধরে , ঐ ঘটনাটি ঠিক কখন ঘটেছে তা বোঝবার চেষ্টা করেছি, ম্যাচের স্কোরকারড ধরে ধরে বিশ্লেষণ করে। সম্ভাব্য অপরাধী খেলোয়াড়দের সনাক্ত করেছি এই প্রত্যেকটি আন্তর্জাতিক ম্যাচে – যেগুলো অধিকাংশই টেস্ট বা একদিনের ম্যাচ , দুয়েকটি টি-২০। এর চেয়ে বেশী স্পয়লার দেব না , কিন্তু আমি হলফ করে বলছি , সংশ্লিষ্ট অপরাধী খেলোয়াড়েরা, কয়েকজন ভারতীয় সমেত, বিশ্ব ক্রিকেটে অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় এবং বিপুল জনপ্রিয় খেলোয়াড়। সম্ভবত, তাঁদের অনেকেই আপনারও প্রিয় খেলোয়াড়। এবং,তাদের মধ্যে কয়েকজন এখনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ নিয়মিত খেলেন চুটিয়ে!
তৃতীয় অধ্যায়টির নাম ‘ ক্রিকেট, ড্রাগস and more…” ! মোট চারটি ধরণের বড় কেস স্টাডি আছে এতে (যার একটি প্রকাশিত হয়েছে এবছরের একটি পূজা সংখ্যায়) । এটিতে আপনি জানতে পারবেন , সেইসব শ্রদ্ধেয় ক্রিকেটারদের নাম যারা ‘ performance enhancer’ হিসেবে ড্রাগসকে ব্যবহার করে, মাঠে সুনাম কুড়িয়েছেন , কিন্তু খুব একটা ন্যায়সংগত উপায়ে নয়। জানতে পারবেন, ড্রাগস ও ক্রিকেটের মধ্যে সম্পর্কের নৈকট্য। জানেন, কোন কোন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দল নিয়মিত ড্রাগস পাচার করত তাঁদের বিদেশ সফরে ? ড্রাগস- আন্ডারওয়ার্ল্ড- ক্রিকেট জুয়া, ক্রিকেটের সাথে জড়িত এই অজানা ত্রিকোণের সাথে পরিচয় হবে পাঠকের এই অধ্যায়ে।
চতুর্থ অধ্যায়টির নাম ‘বিবিধ ষড়রিপুর কাহিনী’। এই অধ্যায়ের শীর্ষকগুলো হল এরকম-
১) ভারতীয় ক্রিকেটের উল্লেখযোগ্য প্রশাসকেরা – স্বার্থ, ইগো, ক্ষমতার লড়াই এবং তৃতীয় রিপুর প্রবেশ
২) ভারতীয় ক্রিকেট প্রশাসনে অন্তহীন দুর্নীতি – এই পর্যায়ের এক বিশেষ অংশে জানতে পাঠক জানতে পারবেন ম্যাচ ফিক্সিং’এর বিষয়ে বেশ কিছু চমকে ওঠার মত তথ্য ।
৩) ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসে অধিনায়ক নির্বাচন সহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে পর্দার পিছনের ইতিহাস
৪) ভারতীয় অধিনায়কত্বের সাম্প্রতিক সোপ সিরিয়াল- বিরাট কোহলী বনাম রোহিত শর্মা – পিছনে কি এবং কোন স্বার্থ ? অনুষ্কার সাথে বিরাট কোহলীর প্রেম -পরিণয় ইত্যাদিতে পরোক্ষভাবে জুয়াড়ীদের ভূমিকা কিভাবে ছিল ? এব্যাপারে কি বক্তব্য ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’এর একজন প্রাক্তন গোয়েন্দা অফিসারের?
৫) সৌরভ এবং নাগমা , এক বিচিত্র রসায়ন – নব্বুইয়ের দশকে কেন ক্রিকেটার আর হিন্দী ফ্লিম অভিনেত্রীরা কাছাকাছি চলে আসত হামেশাই ? আগের খন্ডে আজহার- সঙ্গীতা (বিজলানি)’র, এবং এই খন্ডে বিরুষ্কার পরে এবার সৌরভ- নাগমা। ৯৯’র জুন থেলে ২০০১’র ফেব্রুয়ারী- মাত্র বছর দেড়েকের এই প্রেমজ সম্পর্কে ঠিক কি ঘটেছিল- কি সন্দেহ- কি গুজব এবং কারাই বা ছিল এই সম্পর্কের সাহায্যকারী? পাঠক জানতে পারবেন ভারতীয় ক্রিকেটের এক স্বল্পালোচিত অক্রিকেটীয় কাহিনী ।
৬) গাভাসকর – ভারতীয় ক্রিকেটে এক বিতর্কিত চরিত্রঃ আগের খন্ডে, টস কেলেংকারীর পরে , গাভাস্কারের বিরুদ্ধে সরাসরি ম্যাচ ফিক্সিং’র অভিযোগ এবং অন্যান্য অর্থগৃধ্নুতার এক অজানা কাহিনী!
৭) বেটিং সাইট , জুয়া এবং ভারত – একটি ইনসাইড স্টোরী !
৮ ) বিতর্কিত হার্দিক পান্ডিয়া
৯) আকসু বা আকু – কি এবং কেন ? কেন আই সি সি’র এই তদন্ত বিভাগ বারে বারে ব্যর্থ হয় ক্রিকেট জুয়ার বাড়বাড়ন্ত ঠেকাতে?
পঞ্চম এবং শেষ অংশ ‘উপসংহার’। এখানে পাবেন লেখক হিসেবে আমার শেষ কয়েকটি মন্তব্য বা Parting remarks ! আগের পর্বে , আপনাদের জানিয়েছি আই পি এলে কোন বুকি আর খেলোয়াড় / অফিসিয়ালরা অবৈধভাবে টাকা করেছেন, এই অংশে আপনাদের জানাব একটি চাঞ্চল্যকর এপিসোড- যেখানে আই পি এলের তদন্তকারী পুলিশ অফিসারেরা টাকা কামিয়েছেন অবৈধভাবে ! কেন ব্যর্থ হয়েছিল ২০১৩’র আই পি এল তদন্ত? আপনাদের সাথে শেয়ার করব, ক্রিকেট জুয়ার এই বাড়বাড়ন্ত ঠেকানোর জন্য নানা রাস্তা নিয়ে- এই লেখকের কি মত? কিভাবে কমানো যাবে এই সন্ত্রাসবাদী ফান্ডিং’র একটি বড় রাস্তা ?
ক্রিকেটের জয় হোক , কিন্তু ক্রিকেট- জুয়ার নয় ! এই বইয়ের পাঠকেরাও এই লড়াইয়ে সামিল হোন।
২য় খন্ডের মোট শব্দ- সংখ্যা আনুমানিক ৭০ হাজার।
Reviews
There are no reviews yet.