**** কিছু কথা ছিল মনে ****
একটা সময় পর্যন্ত দুনিয়ার প্রায় সমস্ত দেশেই সাক্ষীর সাক্ষ্যের ভিত্তিতে অপরাধী সাব্যস্ত করার পরে শুরু হতো তার বিচারের প্রক্রিয়া। ভারী ভয়ানক এবং অনিশ্চিত পদ্ধতি। কারণ সাক্ষী কিনে নেওয়া যায়। আদালতে অর্থের বিনিময়ে মিথ্যে সাক্ষী দেওয়াটা অনেক মানুষের পেশা। এমনকি আজও। আবার মেরে, ধরে, ভয় দেখিয়ে সাক্ষীর মুখে দরকার মতো কথা বসানোও সম্ভব। তাই শুধুমাত্র সাক্ষীর মুখের কথা শুনে বিচার করাটা কী চূড়ান্ত অবৈজ্ঞানিক বিষয় ভাবুন তো? অন্ধকারে হাতড়ে বেড়ানোর সামিল।
ক্রিমিনালদের জগত এমনিতেই অন্ধকারের। তার পাঠ করতে গিয়ে যদি এভাবে হাতড়ে মরতে হয় সেটা ভীষণ কষ্টকর নয় কি? ক্রিমিনোলজির আঁধার জগতে আলো দেখালেন এক জার্মান চিকিৎসক ভদ্রলোক। নাম ফ্রাঞ্জ জোসেফ গল। তিনি বললেন, নতুন পদ্ধতি ব্যবহার করো। Phrenology।
তা এটা কী? খায় না মাথায় দেয়?
এ হল phren বা মনের বিদ্যা। মনের সমীক্ষা।
ডাক্তারবাবুর বক্তব্য ছিল, মানব মস্তিষ্কের ধারক হল মাথার করোটি। তাই করোটির আকার – আকৃতি দেখে করোটির মালিকের ব্যক্তিত্ব, স্বভাব, বুদ্ধিমত্তা, চারিত্রিক গুণ বা দোষ বোঝা সম্ভব।
তিনি একখানা ব্রেইন ম্যাপ বানিয়ে ফেললেন। তাতে মস্তিষ্ককে ভাগ করলেন সাতাশ ভাগে। ব্রেইনের কোন অংশ কী জাতীয় চেতনার জন্যে দায়ী তা চিহ্নিত করলেন।
গল সাহেব চূড়ান্ত জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। ১৮২০ আলে এডিনবরায় গলের অনুসারীরা স্থাপন করলেন এডিনবরা ফ্রেনোলজিক্যাল সোসাইটি।
কিন্তু এসব কথা এখানে বলছি কেন?
কারণ অপরাধ বিজ্ঞানের এই নব জাগরণে উদ্বুদ্ধ এক অতি উৎসাহী চরিত্র ছিলেন আপনার এবং আমার এক অতি পরিচিতজন।
কে বলুন দেখিনি?
ডয়েল। স্যার আর্থার কোনান ডয়েল।
ডয়েল সাহেব নিজের মানসপুত্র হোমসের দৈহিক গুণাবলীর বিবরণে কপাল উঁচু দেখিয়েছিলেন ডক্টর গল-এর ব্রেইন ম্যাপিং অনুসারে। কারণ যে অপরাধীকে ধরবে, তার মাথা অপরাধীর থেকেও বেশি সচল হওয়াটা খুব দরকার।
বাংলায় শার্লক হোমসের অনুবাদ অনেকেই করেছেন। স্বর্গত শ্রী অদ্রীশ বর্ধন তাঁদের মধ্যে অন্যতম। আমি নিজে অদ্রীশ বাবুর অনুবাদ পড়ে বড় হয়েছি। অসামান্য কাজ। তারপরেও এই দুঃসাহসিক কাজটা শুরু করলাম বিভা পাবলিকেশনের হয়ে। প্রথম খণ্ডে দুটি উপন্যাস জায়গা পেল। পাঠক আপন করে নেন কিনা সেটাই দেখার। বাকীটা সময় বলে দেবে।
Reviews
There are no reviews yet.