পঞ্চদশ শতকের শেষার্ধের ভারতবর্ষ।
মোগল বাদশারা উত্তর ভারত হয়ে দক্ষিণের দিকে সাম্রাজ্য সম্প্রসারণের জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠেছেন। অপ্রত্যাশিত ভাবে আকবরের সেনাকে পর্যুদস্ত করলেন এক নারী- চাঁদবিবি! চাঁদবিবি দক্ষিণে রাজনীতির অন্যতম এক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র যিনি একাধারে বিজাপুর ও আহমেদনগর দুই পরস্পর বিরোধী রাজ্যের রাজমাতা ছিলেন। দক্ষিণের কুটিল রাজনীতির আবহে নিজ রাজ্য রক্ষার্তে তিনি সমস্ত সেনা ও সেনাপ্রধানদের ‘লবণের প্রতি দায়বদ্ধ’ বা ‘জন্মভূমির প্রতি দায়বদ্ধ’ থাকার আহ্বান করেছিলেন। আর ঠিক এভাবেই যুদ্ধ বিধস্ত পরস্পর বিরোধী রাজ্যগুলো প্রায়-শাসকহীন অবস্থাতেও লম্বা সময়ের জন্য মোগল সেনাকে দক্ষিণে বারে বারে পরাস্ত করতে সফল হয়েছিল। এই রাজনৈতিক সমীকরণের উজ্জ্বলতম ব্যক্তিত্ব ছিলেন মালিক অম্বর। একজন আফ্রিকান কৃতদাস যিনি দামাস্কাস, বাগদাদ থেকে বিক্রিত হতে হতে নিয়তির অদৃশ্য অঙ্গুলি হেলনে ভারতের আহমেদনগরে শেষবারের জন্য হাত বদল হন। ধীরে ধীরে একজন কৃতদাসই হয়ে উঠলেন দক্ষিণের রাজনীতির সবথেকে দক্ষ পরিচালক। মোগলদের তুলনায় মাত্র এক তৃতীয়াংশ সেনাবল সম্বল করেও মালিক বারে বারে মোগলদের পর্যুদস্ত করেছেন তাঁর দক্ষ গুপ্তচর বাহিনী ও মারাঠা অশ্বারোহীদের বাহিনীর ভরসায়। তাঁর অধীনে শিবাজীর পিতামহ মালোজী ভোঁসলে ও পিতা শাহাজী ভোঁসলে সুদক্ষ সেনা পরিচালনা করেছিলেন। তাঁর নীতি গ্রহণ করেই ভবিষ্যতে মারাঠারা অপেক্ষাকৃত ছোট সেনাবল নিয়েও সুদক্ষভাবে যুদ্ধ পরিচালনা রপ্ত করেছিলেন। এই ঐতিহাসিক সুবিস্তৃত উপন্যাস দক্ষিণ ভারতের গরলসম রাজনৈতিক সমীকরণের গল্প, একই সঙ্গে এমন এক মানুষের গল্প যিনি আফ্রিকার এক অন্ধকার কোণে জন্মেও নিজের চেষ্টা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে শাসনযন্ত্রের সর্বোচ্চ আসন লাভ করেছিলেন। এমন এক অদ্ভুত এই কাহিনি যে রূপকথাও হার মানবে।
Reviews
There are no reviews yet.